করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের আতঙ্ক ভালোই প্রভাব ফেলছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। এর কারণে ভ্রমণে কড়াকড়িসহ নানা বিধিনিষেধ ফিরিয়ে এনেছে বহু দেশ। ফলে জ্বালানি তেলের চাহিদায় আবারও ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার জেরে কমতে শুরু করেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। ওমিক্রন আতঙ্কে গত ২৬ নভেম্বর শুক্রবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছিল ব্যারেলপ্রতি প্রায় ১০ মার্কিন ডলার। সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে গতকাল মঙ্গলবারও।
অয়েল প্রাইস ডটকমের তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম কমেছে অন্তত ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এদিন বিকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ২ দশমিক ৭৫ ডলার কমে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয়েছে ৭০ দশমিক ৬৯ ডলারে। প্রায় একই পরিমাণে কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট বা ডব্লিউটিআই তেলের দামও। গতকাল মঙ্গলবার এর দাম ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ, অর্থাৎ ২ দশমিক ৪৩ ডলার কমে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয়েছে ৬৭ দশমিক ৫২ ডলারে। এছাড়া হিটিং অয়েলের দাম কমেছে অন্তত ২ দশমিক ৬৫ ডলার বা শূন্য দশমিক শূন্য ৫৭ ডলার।
মঙ্গলবার প্রাকৃতিক গ্যাসের দামও কমেছে। অয়েল প্রাইস ডটকমের তথ্যমতে, এদিন বিশ্ববাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ২০১ ডলার কমে গেছে। সিএনএন জানিয়েছে, ওমিক্রন আতঙ্কের প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারেও। মঙ্গলবার এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকাসহ প্রায় সবখানেই সূচক ছিল নিম্নমুখী। শেয়ারের দর হারানোয় সবার ওপর রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি। গতকাল এর সূচক পড়ে গেছে অন্তত ২ দশমিক ৪ শতাংশ। জাপানের নিক্কেই ২২৫-এর সূচক নেমেছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, একই অবস্থা হংকংয়ের হ্যাং সেং ইনডেক্সেরও। তবে সাংহাই কম্পোজিটের অবস্থা স্থিতিশীল দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে ওমিক্রনের ধাক্কায় শেয়ারবাজারে বড় পতনের পর সোমবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল মার্কিন শেয়ারবাজার। তবে গতকাল মঙ্গলবার আবারও নিম্নমুখী ধারায় ফিরেছে তারা। এদিন ডো জোনসের সূচক কমেছে ১ শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ আর নাসদাকের সূচক কমেছে অন্তত শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ওমিক্রনের কারণে যদি করোনা মহামারি আরও দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চাকরি বাজারে অস্থিরতা ও সরবরাহ ব্যবস্থার সংকট আরও খারাপ অবস্থায় চলে যেতে পারে। এদিকে, বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ওমিক্রনের কারণে যদি করোনা মহামারি আরও দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চাকরি বাজারে অস্থিরতা ও সরবরাহ ব্যবস্থার সংকট আরও খারাপ অবস্থায় চলে যেতে পারে।