নিউজ ডেস্ক :
বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় চিংড়িতে অপদ্রব্য জেলী পুশকারীদের হামলায় কনজিউমার রাইটস-সিআরবি’র তিনজন স্বেচ্ছাসেবী আহত হন। গুরুতর আহত হয়েছেন মোঃ শরিফুল ইসলাম (৪৫) গাংনী গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ এর ছেলে।
বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবত চিংড়ী মাছে বিষাক্ত জেলী পুশ করার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে অনেকটা ওপেন-সিকরেট তালে চলছিল। ভোক্তাদের স্বার্থসুরক্ষায় কনজিউমার রাইটস-সিআরবি’র সদর দপ্তর থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পর স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও থানার সাথে একাধিকবার বৈঠক করেন সিআরবি’র স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তারপরও কেন্দ্রীয় দপ্তরের ক্রমবর্ধমান অনুরোধের ভিত্তিতে তারা চিংড়ি মাছে বিষাক্ত জেলী পুশ করা থেকে বিরত রাখার জন্য সামাজিক ভাবে তা বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ২৪ ফেব্রুয়ারী বিকাল অনুমানিক ৩:৪৫মিনিটে সিআরবি’র স্বেচ্ছাসেবকেরা গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ পায় একটি ঘেরের শেডে জেলী পুশ করা হচ্ছে। তখন সিআরবি’র স্বেচ্ছাসেবকেরা তৎক্ষনিক বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করেন। গাংনী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিক হোসেন ৫/৬জন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সাথে ছিলেন ডিএসবি সোহেল। তখন জেলী পুশ করা প্রায় ৭৫ কেজি চিংড়ী মাছ জব্দ করে পুলিশ। ছবি তুলে ডিএসবি সোহেল চলে যাওয়ার পর । এক পর্যায়ে ঘের ও গাংনী বাজারের ‘মেসার্স রানা এন্টারপ্রাইজ’ নামক মাছের আড়ৎদার মাসুদ রানার নেতৃত্বে ভেজালকারীরা পুলিশের সাথে বাকবিণ্ডা শুরু করেন এবং তারা পুলিশের সামনে আমাদের ৩জন স্বেচ্ছাসেবীর উপর হামলা চালান ।
সেই সময়ে ফাড়ী ইনচার্জও আহত হন এবং তার হাত কেটে যায়। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে থানা কর্তৃপক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান। ভেজালকারীরা দাঙ্গা সৃষ্টি করে প্রায় ৪০ কেজি চিংড়ী মাছ ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং অবশিষ্ট ৩৫ কেজি জেলী যুক্ত চিংড়ী মাছ উপজেলা কর্মকর্তার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়। আমাদের একজন সদস্য গুরুতর আহত মোঃ শরিফুল ইসলাম (৪৫) কে খুলনা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়।
২৪ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় সিআরবি’র সদর দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে মোল্লাহাট থানার ওসি ও জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক মহোদয়কে মোবাইলের মাধ্যমে অবহিত করা হয়। রাত আড়াইটা পর্যন্ত ওসি মোল্লাহাট সিআরবি’র সদস্যদের বসিয়ে রেখেও কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। উপরন্তু ওসির উদাসীনতার ও গোপনীয়তা সুরক্ষার ব্যর্থতার কারণে তথ্য দেওয়ায় ঐ অঞ্চলে বসবাস করা সিআরবি’র স্বেচ্ছাসেবকরা ভজালকারী ব্যবসায়ীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। হামলার ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিষয়টি জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন ও বাগেরহাট জেলার উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল ইমরান’কে অবহিত করা হয়। প্রাথমিক ভাবে কনজিউমার রাইটস-সিআরবি’র সদর দপ্তর থেকে সবাইকে মৌখিক ভাবে জানানো হলেও আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পরে তা বাগেরহাটের জেলার জেলা প্রশাসক, এডিশনাল এসপি, পুলিশ সুপার, সহ সংশ্লিস্ট সকল দপ্তর লিখিত ভাবে জানানো হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।